সবাই পাবে চিকিৎসা, উন্নত হবে লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল, তাই এবার বিজেপিকে ভোট দেবে সাঁকরাইল : প্রভাকর পন্ডিত

ডেস্ক: সাঁকরাইল বিধানসভা কেন্দ্রের মৌড়ির মহিয়ারী পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীকমল হাসপাতালটিতে এক সময় আউটডোর, ইনডোর, জরুরি পরিষেবাগুলির পাশাপাশি প্রসূতি বিভাগও ছিল। বাম শাসনের 34 বছরের সময়কালে, এই হাসপাতাল কে খারাপভাবে উপেক্ষা করা হয়েছিল।

চিকিৎসকরাও এখানে সাক্ষাত করতেননা। এখানে রোগীদের জন্যও কোনও সুবিধা ছিল না। এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র অবলম্বন, এই হাসপাতালটি ধীরে ধীরে মাতাল, জুয়াড়ী এবং দুষ্কৃতীদের একটি আড্ডায় পরিণত হয়েগেছে । তৃণমূল শাসনের দশ বছরেও পরিস্থিতি উন্নতির জন্য কিছুই করা হয়নি।

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাকর্মীরা হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য নিয়মিত আন্দোলন করছেন। সাঁকরাইলের লোকেরা আশা করছেন যে ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে এই হাসপাতালটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হবে। সেখানে উচ্চ মানেন চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী প্রভাকর পণ্ডিতও এই আশ্বাস দিয়েছেন।

এক নজর : লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল

lakkhikamal hospital

লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল পথ চলা শুরু হয়েছিল ব্লক হাসপাতাল হিসাবে। কিন্তু বর্তমানে কার্যত বেহাল মৌড়ির মহিয়ারী পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো সামান্য কিছু পরিষেবা মেলে এখান থেকে। বহু কাল ধরে বাড়িটির কোনও রকম সংস্কার না হওয়ায় তা ক্রমশই হয়ে উঠেছে ‘ভুতুড়ে বাড়ি’। দেওয়াল থেকে খসে পড়েছে ইট, গজিয়ে উঠেছে বটগাছ। হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডেও নামের পাশে লেখা ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র’।

খানে-ওখানে ভেঙে পড়েছে চাঙড়, উঠে গিয়েছে দেওয়ালের অংশ। বাইরের লোহার দরজা এবং পাঁচিলও অনেক জায়গায় ভগ্নপ্রাপ্ত অবস্থা। বর্তমানে আছেন একজন মহিলা ডাক্তার, একজন ফার্মাসিস্ট, দু’জন নার্স এবং একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। একতলার একটি ছোট ঘরে রোগী দেখা হয়। সেখানে একটি ভাঙা আলমারিতে রয়েছে কিছু ওষুধ। বিশাল জায়গা জুড়ে দাড়িয়ে থাকা এই হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে পরিষেবা বা পরিকাঠামো বলতে প্রায় আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

দোতলা এই হাসপাতালে ঢুকে দেখা গেল, এক কালে পুরুষ বিভাগ, মহিলা বিভাগ এবং প্রসূতি বিভাগ সবই ছিল। বছর পাঁচ-ছয় আগেও হাসপাতাল দিনরাতে খোলা থাকত। হাসপাতালের পাশের কোয়ার্টারে থাকতেন ডাক্তার-নার্সরা। চিকিৎসা-সংক্রান্ত সব রকম পরিষেবাই পাওয়া যেত এখানে।

হাসপাতাল সংস্কারের কাজ শুরু করার কিছু দিন পর থেকেই পরিস্থিতি বদল হতে থাকে। বছর কয়েক আগেও প্রসূতি বিভাগ চালু ছিল এই হাসপাতালে। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা। হাসপাতালের বদল হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বহুকাল আগে স্থানীয় বাসিন্দা কমলকৃষ্ণ কুণ্ডু চৌধুরী ওই অঞ্চলে প্রায় ১৬ বিঘা জমি রাজ্য সরকারকে দান করেন। প্রস্তাব ছিল ওই অঞ্চলে ডাক্তারদের থাকার কোয়ার্টার-সহ একটি হাসপাতাল তৈরি করার। সেই মতো রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে এই হাসপাতালটি। মৌড়ির মহিয়ারী-১ ও ২, দুইল্যা, মাশিলা, আন্দুল গ্রাম পঞ্চায়েত এবং হাওড়া পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রচুর মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মাঝারি মাপের চিকিৎসাও এখানে অমিল। কোনও ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটলেও ভরসা বেসরকারি নার্সিংহোম বা বহুদূরের ডোমজুড় ব্লক হাসপাতাল। গরিব মানুষের পক্ষে তা-ও অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, প্রথম স্বাস্থ্যকর্মী এলেন সকাল ১০টায়। ধীরে ধীরে আসতে শুরু করলেন রোগীরা। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, এখানে এটাই নিয়ম। সকাল ১০টায় হাসপাতাল খোলার পর বন্ধ হয়ে যায় দুপুর ২টোর মধ্যেই। একজন মাত্র মহিলা ডাক্তার। তিনিও সপ্তাহে দু’দিনের বেশি আসেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এমনকী, প্রাথমিক অনেক ওষুধও পাওয়া যায় না বলে জানালেন তাঁরা। ফলে রোগীর সংখ্যা দিনের পর দিন কমে গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *