নববর্ষ ১৪২৮: হালখাতার প্রচলন কীভাবে হল

নববর্ষে নতুন স্বপ্নে নতুন ছন্দে বাঙালির বছর শুরু হলো। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে খাওয়া, অনুষ্ঠানে কেটে যায় সময়। তবে এবার আর তার জায়গা নেই। করোনার দাপটে রীতিমতো মানুষ ভয়ে কুঁকড়ে রয়েছে। তবে বাড়িতে যে যেভাবে পারে অনুষ্ঠান করছে বা রান্না করে বাড়ির লোকেদের মনোরঞ্জন করেই খুশি পাচ্ছে নিজে। তবে এই দিনটাতে কেউ কেউ করে পুজো।

আবার হালখাতার উপস্থিতিও ভুলে চলবে না। নববর্ষের দিনে অনেক দোকানে লেখা হয় হালখাতা। এটি হলো নতুন বছরে আর্থিক জীবন নতুনভাবে শুরু করার ইঙ্গিত। নতুন বছরের হিসেব নিকেশ এর থেকেই শুরু হয়। তবে এটাও জানেন কি যে বঙ্গাব্দের সূচনার সময়ে নববর্ষের অনুষ্ঠানের সঙ্গে হালখাতার কোনো যোগই ছিলো না? তাহলে পরবর্তী কালে নববর্ষের সঙ্গে কীভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়লো এই বিশেষ উৎসব? জানতে হলে পড়ুন এখানে।

মানুষ বিবর্তনের এক অধ্যায়ে চাষাবাদের জন্যে লাঙলের ব্যবহার শেখার পর স্থায়ী জীবন যাপন করতে শুরু করে। কৃষিজাত দ্রব্য বিনিময়ের প্রথা তখন থেকেই এলো সমাজে। এই লাঙল বা হালের মাধ্যমে চাষের ফলে উৎপন্ন ফসল বা আনাজ সামগ্রী বিনিময়ের সব হিসেব অর্থাৎ আয়-ব্যয়ের সব খরচ একটি খাতায় লিখে রাখতে শুরু করা হলো ব্যবসার সুবিধার জন্যে।

আরো পোস্ট- নবরাত্রিতে মা “চন্দ্রঘন্টা”র উপাসনা, জেনে নিন বিধি

সেই থেকে এই বিশেষ খাতার নাম দেওয়া হলো “হালখাতা”। তবে এর সঙ্গে বিদেশী যোগও রয়েছে। সংস্কৃতে হল বা হালের অর্থ লাঙল এবং ফরাসিতে হাল শব্দের অর্থ নতুন। সেই থেকেই এই নতুন বর্ষে পা রাখতেই নতুনভাবে হিসেবে নিকেশের কাজ শুরু করা হয় এই খাতার মাধ্যমে।

এবার কালের নিয়মে এই শুভ কাজের জন্যেও বরাদ্ধ করা হয়েছে একটি শুভ সময় বা মুহূর্ত। রীতিমতো পুজো করে হালখাতা খোলা হয় প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও দোকানে দোকানে। চৈত্র মাসের শেষে রাজস্ব পরিশোধ করে দেওয়ার রীতি থেকেই আসে হালখাতা। সেই বিশেষ খাতার পুজো করে, প্রথম পাতায় স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে তারপর লেখা শুরু হয় হিসেবে।